মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ অসংখ্য পীর ফকির, সাধক ,অলি আউলিয়ার সাধন ভজন এর তীর্থ স্থান।বারো আউলিয়ার পূণ্যে ভূমি হিসেবে খ্যাত চট্রগ্রামে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী ১৩৪৭ হিজরী এবং ২৫ ডিসেম্বর, ১৯২৮ সাল রোজ মঙ্গলবার সুবহে সাদেকের সময় মাইজভান্ডার দরবার শরীফ, ফটিকছড়ি, চট্রগ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
হযরত জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (রহ) গাউছূল আজম খাদেমুল ফোকরা শাহ সূফী হযরত সৈয়দ দেলোয়ার হোসাইন মাইজভান্ডারী (রহ)র জোষ্ঠ্য পুত্র এবং গাউছ‚ল আজম হযরত গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারী (রহ)র এর দৌহিত্র।
প্রথমে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল বদিউর রহমান। তাঁর নাম রাখার কয়েক দিন পর মাইজভান্ডারীয়া ত্বরিকার প্রধান পুরুষ গাউছূল আজম হযরত মাওলানা শাহ সূফী সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক.) কর্তৃক স্বপ্নে নির্দেশিত হয়ে বদিউর রহমান নাম পরিবর্তন করে জিয়াউল হক রাখা হয়। জিয়াউল শব্দের অর্থ হলো আলো এবং হক শব্দের অর্থ হলো সত্য। জিয়াউল হক শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো সত্যের আলো। শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.) সত্যিকারের জ্যোতি হিসেবে ধরাধামে এসেছিলেন।
মাইজভাণ্ডার দরবার এ যে কয়জন মহা পুরুষ জন্ম গ্রহন করেছেন তার মধ্যে শাহেনশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী অন্যতম। জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডার তার পিতার নির্দেশে বায়াত গ্রহন করেন সীতাকুণ্ডের উত্তর সলিমপুর নিবাসি প্রকাশ ফৌজদার হাট এর হযরত মওলানা সফিউর রহমান হাশেমি রাঃ এর নিকট। তবে তিনি শুধু বায়াত করান এর পর তাদের মধ্যে আর কোন সম্পর্ক ছিল না। বাকি সব কাজ পিতা দেলওয়ার হসাইন
মাইজভাণ্ডার করেন।
হযরত জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.) দুনিয়াবি ভোগ বিলাস মাটিতে ধুলোয় মিশিয়ে কঠোর ত্যাগ ও সাধনার জীবন অতিবাহিত করেছেন। মনীষীরা বলেছেন ‘এমন জীবন হবে করিতে গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন।’ শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.) কঠোর রিয়াজতের মাধ্যমে ফানাফিল্লাহ ও বাকাবিল্লাহর স্তরে পৌঁছে ছিলেন। তিনি মাঝে মধ্যে একাধারে ৮/১০ দিন ঘরের দরজা খুলতেন না। হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যেতেন। কাউকে না বলে হঠাৎ মাইজভান্ডার থেকে পায়ে হেঁটে চট্রগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতেন। পৌষ মাঘের কন কনে শীতের মধ্যে বাড়ির আন্দির পুকুরে দিনের পর দিন ডুবে থাকতেন। কবি নজরুল যথার্থই বলেছেন, ‘তুমি বুঝিবেনা হায়, আলো দিতে পোড়ে কত প্রদীপের প্রাণ।’
0 Comments